হিন্দু শাস্ত্রে কেন কুম্ভ মেলা এত গুরুত্বপূর্ণ?
সনাতন হিন্দু ধর্ম মতে, দেবাসুরের মিলিত প্রচেষ্টায় সমুদ্রমন্থনের সময় বিভিন্ন মহৎ উপকরণের সাথে উঠেছিল অমৃত কলস। সেই কলস থেকে কিছু ফোটা অমৃত পৃথিবীর চারটি স্থানে পতিত হয়৷ সেই চারটি মহাপুণ্য স্থান হল, প্রয়াগরাজ, হারিদ্বার, উজ্জয়িনী ও নাসিক।তাই,এই চারটি জায়গায় প্রতি ১২ বৎসর অন্তর অনুষ্ঠিত হয় কুম্ভ। কিন্তু মহাকুম্ভ মেলা শুধুমাত্র প্রয়াগরাজেই অনুষ্ঠিত হয়, প্রতি ১৪৪ বছরে একবার।
![]() |
Mahakumbha 2025 |
আধ্যাত্মিকতা ও প্রযুক্তির যুগলবন্দি-২০২৫-এর মহাকুম্ভ
২০২৫ এর প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভ কোনও সাধারণ তীর্থ নয়। এখানে আধ্যাত্মিকতা মিশে গেছে প্রযুক্তির সাথে। তীর্থযাত্রীরা শুধু কুম্ভে স্নান করেছেন, তাই নয়, তারা ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল স্মারক বা NFT ও সংগ্রহ করেছেন অতি সহজেই।প্রচন্ড জনসমাগম হলেও, পুলিশ ফোর্স ও অন্যান্য সিকিউরিটি সিষ্টেম AI ও Drone ব্যাবহার করে ভীর নিয়ন্ত্রণ করেছেন ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছেন। শুধু তাই নয়,স্মার্ট টয়লেট, ওয়াটার স্টেশন ও হেলথ চেক-আপ বুথ — মহাকুম্ভে সবকিছুই আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় প্রস্তুত।
বিশ্বজুড়ে আগ্রহ ও পর্যটন
মহাকুম্ভ ২০২৫, কোনও সাধারণ মেলা যে নয়, তার আচ পাওয়া গেছিল মেলার আগে থেকেই, মহাকুম্ভ মেলায় আনুমানিক ৩০কোটির বেশী জনসমাগম হওয়ার আশা করা হয়েছিল, কিন্তু, জনসমাগম ছাড়িয়ে গিয়েছে ৬৫ কোটিরও বেশী। যা কিনা, আশানুরূপ অবস্থার ২ গুণেরও বেশী। প্রত্যহ দেড় কোটির বেশী জনসমাগম ও বিশেষ বিশেষ স্নানের তিথিতে প্রায় ৩.৫ কোটির বেশী ভক্ত সমাগমে মহাকুম্ভ ২০২৫ এক অনন্য অবস্থায় পৌছে গেছে৷ শুধু তাই নয়,মহাকুম্ভ ২০২৫ এর জন্য ভারতের পর্যটনের ভিসার আবেদন ২১.৪% বৃদ্ধি পেয়েছিল।বিশ্বের প্রতিটি দেশের প্রান্ত থেকে ভক্ত,গবেশক, ছাত্র,পর্যটক প্রত্যেকে এই মহাসমাগমের সাক্ষী হতে আগ্রহী ছিলেন।
বিশেষ স্নান দিবস (Shahi Snan):
মহাকুম্ভের ৪৫ দিনের ২৪×৭ ই স্নানের জন্য পুণ্যজনক হলেও, কিছু বিশেষ তিথিকে সাহী স্নান বা বিশেষ পুণ্যজনক স্নানের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল৷ পন্ডিতগণ বিবেচনা করে এই তিথিগুলি স্থির করেন৷
- মকর সংক্রান্তি (১৪ জানুয়ারি)
- মাঘ পূর্ণিমা (১২ ফেব্রুয়ারি)
- বসন্ত পঞ্চমী (৩ ফেব্রুয়ারি)
- শিবরাত্রি (২৬ ফেব্রুয়ারী)
মহাকুম্ভ, শেষ, কিন্তু রেশ?
মহাকুম্ভ কোনও সাধারণ ধর্মীয় উৎসব না,এই ভারতের আধ্যাত্মিকর আত্মপরিচয়৷ জনভক্তির প্রকাশ।হিন্দু সনাতনীর একত্বের প্রতীক, মহাশক্তিমানের মেলবন্ধন। অধ্যাত্ম,প্রযুক্তি,বিশ্বজননীনতার মহামিলন এই মহাকুম্ভ ২০২৫। ভারতীয় সংস্কৃতির ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরে রচনার সাক্ষী এই মহাকুম্ভ ২০২৫।
আপনিও কী মহাকুম্ভ মেলায় গিয়েছেন বা ভবিষ্যতে যেতে চান? আপনার মতামত নিচে কমেন্টে জানান। আর পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।