রামনবমী কেন পালন করা হয় ?
রাম নবমী সম্পর্কে জানার আগে আমদের জানতে হবে শ্রী রামচন্দ্র কে ছিলেন। রামচন্দ্র ছিলেন ভগবান শ্রী বিষ্ণুর সপ্তম অবতার ছিলেন। অত্যাচারী রাক্ষস রাজা রাবণ কে বধ করে ত্রিভুবনে ধর্মের প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ত্রেতা যুগে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।
রামায়ণ বর্ণিত ঘটনা
অযোধ্যার নরপতি দশরথের পুত্রসন্তান না হওয়ায় খুবই মনঃকষ্টে জীবনযাপন করতেন। তখন কুলগুরু বশিষ্ঠের উপদেশে সস্ত্রীক রাজা দশরথ, শিবদুর্গা মন্ত্র জপে ব্রতী হন , কঠোর তপস্যায় তুষ্ট হন দেবাদিদেব ও দেখা দেন রাজাকে৷ মহাদেবের নির্দেশেই সস্ত্রীক রাজা দশরথ পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করার সংকল্প গ্রহণ করেন। কিন্তু, যজ্ঞকর্মে পুরোহিত কে হবেন? মহারাজ দশরথ অনেক চেষ্টা করে হিমালয় থেকে আমন্ত্রণ জানিয়ে রাজ্যে নিয়ে আসলেন, মহামুনি ঋষ্যশৃঙ্গকে ৷
$ads={1}
মহামুনি ঋষ্যশৃঙ্গ শুরু করলেন সেই মহাযজ্ঞ৷ যজমান সস্ত্রীক মহারাজ দশরথ। সেই যজ্ঞের চরু ভক্ষণ করে মহারাণী কৌশল্যা গর্ভবতী হলেন। এরপর চৈত্রমাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে, পুনর্বসু নক্ষত্রের উদয়কালে, শুভযোগে,শুভলগ্নে ভগবান নারায়ণ, পরমপুরুষ শ্রীরামচন্দ্র রূপে মহারাণী কৌশল্যার গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হলেন৷ রাজ্যে মহা উৎসব হল। দেবগণ পুষ্পবৃষ্টি করতে লাগলেন। সেই মহাপুণ্যময় তিথিকে স্মরণ করেই পালিত হয় শ্রীরামনবমী।যে পুণ্যাত্মা মানুষ এই শুভতিথিতে উপবাসী থেকে রামনবমী ব্রত পালন করেন, তার গোলোক ধাম প্রাপ্তি হয়। এই তিথিতে পিতৃপুরুষের তর্পণ ও দশমীতে ব্রাহ্মণ ভোজন করিয়ে ব্রত সমাপন কর্তব্য।
ভগবান রাম চন্দ্র সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর:
১) ভগবান রামের জন্মদিন কবে ?
উত্তর : সনাতন হিন্দু শাস্ত্রে জন্মদিনের চেয়ে জন্ম তিথির গুরুত্ব বেশি। তাই বছরের যেদিন তিথির সাথে মিলে যায় সেই দিন রামনবমী পালিত হয়। চৈত্রমাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে শ্রী রাম চন্দ্রের জন্ম হয়।
২) রামনবমী তে কেন হনুমানের পূজা করা হয় ?
উত্তর: হনুমান হলেন রাম চন্দ্রের পরম ভক্ত, তাই হনুমানের পূজার মাধ্যমে আমরা রাম চন্দ্র কে স্বরণ করি। হনুমান হচ্ছেন শিবের অংশ, হনুমান চল্লিশা তে আছে 'শংকর সুবন কেসরী নন্দন'। আমরা জনি হর ও হরি একে অপরের ভক্ত , তাই হনুমানকে পূজা করলে শ্রী রাম চন্দ্র ও খুশি হন। তাই আমরা রাম নবমী তে হনুমানের পূজা করি।
$ads={2}
৩) রাম শব্দের অর্থ কি ?
উত্তর: রাম শব্দের অর্থ অনেক মহান, রাম শব্দের উচ্চারণে শান্তি পাওয়া যায়। দস্যু রত্নাকর নারদ মুনির উপদেশে রাম নাম যপ শুরু করে, সে এতই পাপী ছিল যে সে রাম নাম উচ্চরণ করতে না পেরে মরা মরা উচ্চরণ করত, পরবর্তীতে সে ঋষি বাল্মীকি নামে পরিচিত হন, তিনি 'রামায়ণ' রচনা করেন। রাম শব্দের অর্থ হল-
রমন্তে সর্বভূতেষু স্থাবরেষু চরেসুচ।
অন্তরামা স্বরূপেন যশ্চ রামেতি কথ্যতে ।।
অর্থ - যিনি সব জীবে বিরাজমান তিনি হলেন রাম।
জয় শ্রী রাম 🙏